কাজী রাফি
কথাশিল্পী
মাতোমা এক সপ্তাহের মধ্য সদর দফতর থেকে আসা এক মেইল খুলে অবাক হলেন। মেইল প্রেরণকারী কর্তা জানিয়েছেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অরিত্রের চাকরি স্থায়ীকরণে তার অবেক্ষাধীন সময়কালে সম্পন্ন করা প্রশিক্ষণের ফলাফলকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এটুকু বলে তিনি ক্ষান্ত হন নি, উল্টা তার কর্তৃক বেনিন আর্মিকে অযাচিতভাবে সুবিধা দেয়ায় তা গ্রহণ না করে পুনরায় তাকে প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মাতোমা জানেন, অরোরাই এমন তথ্য পাঠিয়েছে। তবু তিনি ধৈর্য ধারণ করে অরোরাকেই প্রতিবেদনটি পুনরায় প্রস্তুত করতে বললেন। তার সামনে নিজের উদার্যতা প্রমাণ করতে অরোরার পছন্দ করে এমন কথাই বললেন, “জাতিসংঘ শুধু ক্ষমতাধর দেশের স্বার্থ দেখে আর বেনিনের মতো দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো ‘শান্তিরক্ষী‘ শব্দের আড়ালে তাদের স্বার্থ পাহারা দেয়। এখন দরিদ্র এক রাষ্ট্রকে আমি তাদের হিসাব মেলাতে না পারা ষাট হাজার ডলারের সামান্য অর্থ মওকুফ করেছি বলে ধনী রাষ্ট্রগুলোর তোষামোদখানা আমার জ্ঞাতি-গোষ্ঠি উদ্ধার করছে। কী আর করা! ভগবানদের যা ইচ্ছা…“
অরোরা এই প্রথম মাতোমার কথায় খুশি হলো। আর নিজের ওপর বিরক্ত হলো। সুতরাং মাতোমার দিকে তার চাহনির ভাষায় এই প্রথম পেশগত ভাবের চেয়ে একটু ব্যক্তিগত ভাবটুকু চলে এল। মাতোমা কোনোদিন এমন মোহনীয় চাহনির অরোরাকে দেখে নি। অরোরার চাহনি মাতোমাকে স্বপ্নময় আশ্বাসের এক ইঙ্গিত দিল যেন। তিনি অরোরাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য, অরিত্রের সাথে অরোরার মেশামেশির ব্যাপারটা ভুলে যেতে চাইলেন। শুধু তাই-ই নয়, তিনি হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এরপর থেকে অরোরাকে কোনো নির্দেশ তো নয়ই বরং তার মন জোগাতে নিজ থেকে তিনি কোনো কিছু তার ওপর এমনকি অরিত্রের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। অরোরাকে তার নিজের প্রস্তাবের পক্ষে রাজি করানোর আগ পর্যন্ত যে কোনো মূল্যে তিনি এই অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
বিধিবাম! তিনমাস যেতে না যেতে অরিত্র ছুটির আবেদন করল। এবং প্রায় সাথে সাথে অরোরাও ছুটির আবেদন করল। দুজনে একসাথে ছুটি চাওয়ায় সন্দিহান মাতোমা অরোরাকে ডেকে বললেন, “বিভাগটা চলবে কীভাবে?“
অরোরা চোখ কপালে তুলে এমন অভিব্যক্তি করল যেন সে মাতোমার যোগ্যতা নিয়ে তার যে আত্মবিশ্বাস এমন প্রশ্নে তা দ্বিধাগ্রস্ত হয় বলে তাকে বুঝিয়ে দিল। বলল, “অরিত্রও একা এই বিভাগ চালাতে সক্ষম। আর আপনি তো পরিপক্ক একজন কর্তা। আপনার একার পক্ষে এমন তিনটি বিভাগ পরিচালনা করা সম্ভব, স্যার।“
অরোরার প্রসংশায় শরীর কাঁপিয়ে হাসলেন মাতোমা। বললেন, “তোমার অমূল্য প্রশংসার কাছে সবসময় আমি পরাজিত হতেও ভালোবাসব।“
“নো মি. মাতোমা, আমার প্রশংসা আপনাকে জয়ী করুক আমি তাই-ই চাই।“
“হ্যা, এই পরাজয়টা জয়ের চেয়ে বড় হয়তো।“
“আপনি অনেক দয়ালুও বটে।“
“কফি পান করবে, অরোরা?“
“ইয়েস স্যার, সিয়োর…“
কফি পানের ফাঁকে মাতোমা প্রশ্ন করলেন, “তুমি কি রুমানিয়াতে যাচ্ছ?“
“আমি যদি বলি, আমি অরিত্রের সাথে ভারতবর্ষ দেখতে যাচ্ছি তবু আপনাকে আমি আপনাকে ঈর্ষাপরায়ণ দেখতে চাই না। আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না, কোনো একজন ঈর্ষাপরায়ণ মানুষ আমার কর্মস্থলে পর্যন্ত আছে। ঈর্ষাপরায়ণ কাউকে আমি আমার আত্মার সাথী করতে মোটেও প্রস্তুত নই, মৃত্যু হলেও নয়। আত্মার সারথিকে তো বিভিন্ন পন্থায় যাচাই করে নিতে হয়…“
মাতোমা মহা ফাঁপড়ে পড়লেন। ‘আত্মার সাথী’ শব্দটা তার বুকের ভেতর খচখচ করে বাজছে। এই শব্দ দুটা কেন যেন তার আর অরোরার জুটির ক্ষেত্রে তার নিজের কাছেই বেমানান মনে হচ্ছে। আত্মা-ফাত্মা ব্যাপারগুলো তিনি বিশ্বাস করেন না। তার মতে শরীরের চাওয়ার বাইরে পুরুষের অন্য কোনো ব্যাপার নারীদের সাথে থাকাটা স্রেফ বালখিল্যতা ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু অরোরার পাশে অরিত্রকে নিয়ে ভাবতে ‘আত্মার সাথী’ শব্দ দুটো বেশ দ্যোতনা তুলছে। এই দ্যোতনাই তার মনের জ্বালা বাড়িয়ে দিল।
[hfe_template id=’81’]
প্রশংসা বাক্যের গর্বে তিনি এই মুহূর্তে ফুলে-ফেঁপে আছেন এবং তারই আবেশে দুজনেরই ছুটি অনুমোদন করে স্বাক্ষরও করেছেন, না হলে তিনি হয়তো অরোরাকে বলতেন, “দুঃখিত তোমাদের দুজনকে একসাথে ছুটি দিতে পারছি না। তবে তুমি যেহেতু অরিত্রকে প্রশিক্ষণে সবচেয়ে চৌকষ কর্তা হিসাবে শনাক্ত করেছ সুতরাং অরিত্রকে একা রেখে আমরা মানে আমি আর তুমি একসাথে ভ্রমণে বের হতে পারি।“
এসবের কিছুই বলা হলো না। ভদ্র মানুষকে কত কত ভণ্ডামির মুখোশ পরে থাকতে হয় –আজ তিনি তা টের পেলেন। নিজের ভেতরের কথা ঢেকে রেখে অরোরার কাছে ভদ্রতার লেবাস ধরে রাখার জন্য তিনি বললেন, “কিন্তু হবু স্ত্রীকে মানে… পছন্দের নারীকে তো একজন পুরুষ অন্য আরো একজন পুরুষের সাথে ঘুরতে দিতে না-ও চাইতে পারেন।“
অরোরার কাছে মাতোমার সব যুক্তির পাল্টা যুক্তি যেন প্রস্তুত করা আছে। সে মাতোমার উদ্দেশে বলল, “কেন মি. মাতোমা, স্ত্রীকে রেখে পুরুষরা দুনিয়াজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে না? আর তার স্ত্রী কি দেশে বসে বসে তখন সাত্তিকতা অথবা শুদ্ধতা চর্চাই শুধু করছে? রাজা-বাদশাহর স্ত্রীগণ, হারেমে তাদের উপপত্নীগণও বাদশাহদের কঠোর নিয়ন্ত্রণও ভঙ্গ করেছে -এমন অনেক উদাহরণ আছে। তাহলে কি ধরে নেব, সেইসব পুরুষরা যারা পৃথিবীময় একজনের পর একজন, কখনো কখনো এই সংখ্যা অগনিত; নারীদের পেছনে ঘুরে মরছে, নিজ স্ত্রীর ব্যাপারে তারা নির্বিকার? “
মাতোমা চমকে উঠলেন। অরোরা কি জেনে গেছে, তার স্ত্রী-সন্তানদের কথা? যদিও এই বয়সী একজন মানুষের স্ত্রী-সন্তান থাকা স্বাভাবিক। তবু, অরোরাকে তিনি তার নিঃসঙ্গ জীবনের গল্প এমন করে শুনিয়েছিলেন যেন সে ধরেই নেয় যে, তিনি অবিবাহিত। তাহলে, অরোরা কি তার কোনো কথাই বিশ্বাস করে নি? এইমাত্র বলা তার সব কথা কি তাকে ঘিরেই? তাই তো, তার স্ত্রীকে নিয়ে তার নিজেরও কোনো মাথা ব্যাথ্যা নেই। এর কারণ তার কাছে স্পষ্ট। মাথাটা যখন অরোরার মতো লাস্যময়ীর চাহনি দেখেই নষ্ট হয়, তখন অন্য কোনো ব্যথা আর কি স্পষ্ট হয়? মাতোমা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। মনে মনে বললেন, ‘যার কারণে করি চুরি, সে-ই বলে চোর।‘
পরিশেষে অরোরার চাছাছেলা কথার তোড়ে এবং জটিল এক মনস্তাত্ত্বিক চাপে পড়ে মাতোমা রণে ভঙ্গ দিলেন। কফির কাপে শেষ চুমুক দিয়ে বললেন, “যেখানেই যাও, আনন্দময় হোক তোমার অবসর। বেস্ট অব লাক…“
অরোরা তাকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যাবার পর তিনি মনে মনে বললেন, ‘যেখানেই যাও, যা ইচ্ছা করো… আমার হাত থেকে তোমার রেহাই নেই। ভালো মানুষের ভাণ ধরে, অপেক্ষা করে করে হয়তো শেষমেশ তোমাকে পাওয়া হবে না। কিন্তু ম্যাম, আমিও তখন আমার চাকরির মাথায় জল ঢেলে হলেও, তোমাকে জোরপূর্বক দখল করব। মাঝখান থেকে জীবন হারাবে গোবেচারা অরিত্র!‘
নিজের অফিসের পথে যেতে অরোরা অরিত্রকে মগ্ন হয়ে কাজ করতে দেখে তার ডেস্কের কাছে এসে কণ্ঠকে নিচু করে বলল, “অরিত্র! অরিত্র…“
[hfe_template id=’81’]
অরিত্র খুব চেনা এক গন্ধ পেল। অরোরা যে সুগন্ধি ব্যবহার করে তা তার ত্বক-চুলে মিশে এমন এক ঘ্রাণ ছড়ায় যা অরিত্রকে জটিলতাহীন, আনন্দময় এক জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই ঘ্রাণ অরিত্রের নাসারন্ধ্র হয়ে তার আত্মায় গিয়ে শীতলতর সুবাতাস হয়ে যায়। স্নিগ্ধ শব্দটি কেন ‘স্নিগ্ধ‘ তা অরোরার এই ঘ্রাণে সে উপলব্ধি করে। মনে হয়, কোনো এক রোদ ঝলমল, ঝরণাময় পাথুরে বনে ‘মর্মর‘ ঝরে পড়া পাতাদের গান শুনছে সে আর সাদা ডানার ভাঁজতোলা, বিষন্ন পাপড়ির নিচে বড় বড় আনন্দ-হিল্লোলিত চোখের এক পরী এসে তার কানে ফিসফিস করে বলছে, “অরিত্র! অরিত্র…“
দ্রুত চোখ তুলে তাকাতেই অরিত্র দেখল স্মিত হাসিমুখে ভাঁজতোলা বিষন্ন পাপড়ির নিচে বড় বড় আনন্দ-হিল্লোলিত চোখের সেই পরী আর কেউ নয়, অরোরা! তার মুখেও স্মিত হাসি ফুটল। অরিত্রের নিষ্পাপ আর নীরিহ এই হাসি আনন্দিত করল অরোরাকেও। ওমন করে তাকে ডাকায় অরিত্র অবাক হয়ে বলল, “অরোরা, ম্যাম!“
কণ্ঠকে আরো নিচু করে অরোরা বলল, “আমার অফিসে এসো। কথা আছে।“
অফিসে বসে অরোরা বলল, “তোমার ফ্লাইট কবে?“
“আগামিকাল।“
“বাতিল করে দাও।“
“কেন?“
“তোমার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।“
“সদর দফতর করেছে, না কি মি. মাতোমা আমার ছুটি বাতিল করেছেন?“
“আমি তোমার ছুটি বাতিল করে দিয়েছি।“
অরোরার কথায় চোখে-মুখে হতাশা ফুটে উঠল অরিত্রের। কতদিন ধরে, কতকাল থেকে সে মায়ের মুখ দেখে নি। তার নিজের দেশের একটা কলমিলতার ডাল, মাঠভরা সবুজ ধানক্ষেত, গাছ-পাতার ফাঁক-ফোকর থেকে পুকুরজলে ছড়িয়ে পড়া আলো-ছায়ার খেলা অথবা সেই পুকুরের একটা মরা ডালে মাছরাঙার চুপ করে বসে থাকা সে যেন কতকাল ধরে দেখার আশায় প্রহর গুনছে। সেই প্রহরের কাছাকাছি আসার পর তার সবচেয়ে পছন্দের এক মানুষই কি না তাকে বলছে, ‘আমি তোমার ছুটি বাতিল করে দিয়েছি।‘
চারদিকের এই পরিপাটি গোছানো জীবনে যদিও ‘অরোরা‘ নামের এক অগোছালো প্রেরণা আছে তবু ঘড়ির কাটা ধরে ব্যস্ততা আর মাতোমার রোষানলভরা দৃষ্টির বিষ থেকে কিছুদিনের মুক্তির জন্য সে মরিয়া হয়ে উঠেছিল এবং দীর্ঘদিন পর ছুটি যাচ্ছে ভেবে তার আত্মা মুক্তির যে আনন্দে মেতে উঠেছিল, তাতে এক বিষন্ন সুর ছড়িয়ে পড়ল। অরিত্র অবাক হয়ে তাকে প্রশ্ন করল, “তুমি? তুমি আমার ছুটি বাতিল করে দিয়েছ, কিন্তু কেন?“
“জি, আমি। কেন, আমি তোমার ছুটি বাতিল করতে পারি না?“
“ইয়েস ম্যাম, ইউ ক্যান। বাট…“
“তবে কী?“
“তুমি তো অনেক দয়ালু, তুমি এমনটা করতে পারো না।“
“হ্যা, আমি পারি। দয়ার মাঝেও এক ধরণের স্বার্থ থাকে, জানো? তবে, তোমার ছুটিটা তুমি পেতে পারো, একটা শর্তে। আমাকেও নিতে হবে তোমার সাথে…“
অরিত্র ভাষা হারিয়ে হতভম্ব হয়ে অরোরার মুখের দিকে অবিশ্বাসের চাহনিতে তাকিয়ে থাকল। ভাবল, অরোরা হয়তো তাকে বিব্রত করতে দুষ্টুমি করে অযথাই একটা প্রসঙ্গের অবতারনা করেছে। কেন না, এই বিভাগ একা চালাতে মাতোমার কোনোভাবেই সম্মত হওয়ার কথা নয়। অরিত্রকে অমন ভঙ্গিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে অরোরা বলল, “বিশ্বাস হচ্ছে না যে, আমিও তোমার সাথে যাচ্ছি। না কি আমাকে নিতে ভয় পাচ্ছ?“
[hfe_template id=’81’]
অরিত্রের যে মুহূর্তে বিশ্বাস হলো যে, অরোরা সত্যিই তার সাথে ছুটিতে যাচ্ছে সেই মুহূর্তেই তার চোখের সামনে নিজের দেশের মায়াবী সকাল, নদীতে মাছধরা জেলে, গোধূলীলগ্নের পর সাঝের মায়ায় ডুবে যাওয়া আঁধারি অথবা জোছনায় ভাসা প্রান্তর দোল খেতে খেতে তাকে আনমনা আনন্দে ভাসাল। সে বলল, “তুমি জানো, আমার মা তোমাকে পেলে কত খুশি হবেন! মা তোমাকে এত স্নেহ করবেন যে তাকে ছেড়ে আসতে তোমার কষ্ট হবে…“
“তাকে দেখার অপেক্ষায় আছি। ও হ্যা, আমার জন্য তোমার ছুটিতে কয়েকদিন দেশে থাকা হবে না। দক্ষিণ এশিয়া বিশেষত প্রাচিন ভারতবর্ষের কিছু অংশ ঘুরে দেখতে চাই। ‘দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণ ও প্রকরণ’ নিয়ে আমি একটা অভিসন্দর্ভ প্রস্তুত করতে চাই। তুমি হয়তো জানো না যে, আমি এ জন্য একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কথাও বলেছি। কাজটা দ্রুতই করতে হবে।“
“বাহ, তা হলে তো ভালোই হলো। আমিও তোমার সাথে জ্ঞানার্জনের পথেই থাকছি। আমাদের ধর্মগ্রন্থ জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজনে চীন দেশেও যেতে বলেছে। তোমার এই উপাসনার পথে আমিও এক পথিক হবো ভেবে আনন্দ লাগছে। কিন্তু ম্যাম…“
“কিন্তু? কী বলো।“
“তুমি যে অভিসন্দর্ভ প্রস্তুত করছ, আমি তার প্রথম গিনিপিগ নই তো!“ অরিত্রকে এমন করে কথা বলতে প্রায় শোনেই নি অরোরা। তার নীরিহ চেহারার মাঝে যে একজন রসিক কথক বাস করে তা জেনে অরোরা খুশি হলো। প্রাণখোলা হাসি দিয়ে সে বলল, “তাই তো, আমি কি বোকা! তোমাকেই তো আমি আমার পেপারস এর জন্য এক গিনিপিগ হিসাবে নিতেই পারি। ধারণাটা দেবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ মি. অরিত্র।“

কাজী রাফি
জন্ম – ২২ নভেম্বর, ১৯৭৫, বগুড়ায়।
মানুষ ও তাদের যাপিত জীবন এবং প্রকৃতি দেখার প্রয়োজনে ঘুরেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। চাকরির প্রয়োজনে আফ্রিকায় বাস করেছেন দুই বছরের অধিক সময় এবং আফ্রিকার প্রকৃতি-সংস্কৃতি, তাদের প্রান্তিক মানুষের যাপিত জীবনকে দেখেছেন খুবই কাছ থেকে। আফ্রিকার পটভূমিতে লেখা ‘ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা’ তাঁর প্রথম উপন্যাস। এই উপন্যাসেই কালি ও কলম পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি; তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ, ১১ টি উপন্যাস এবং ৬ টি ছোট গল্পগ্রন্থ সবই পাঠক প্রিয়তায় প্রথম সারিতে। তাঁর লেখা ‘ত্রিমোহিনী’ উপন্যাসকে মহাকাব্যিক অ্যাখ্যা দিয়েছেন কিংবদন্তী ছোট গল্পকার হাসান আজিজুল হক ।
পুরস্কার, এইচএসবিসি কালি ও কলম পুরস্কার -২০১০, এমএস ক্রিয়েশন সম্মাননা -২০১০, নির্ণয় স্বর্ণপদক-২০১৩, এসএম রাহী পদক ২০১৯
ওয়েবসাইট