অলীক চিত্রকলা
ফরিদ আহমদ দুলাল
পড়শির ঘরের দেয়ালে কুলাকুচার জল ফেলে আমি হতবাক
জলের রেখায় ফুটে ওঠে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ
ক্রমশ হারায় জলের কলা সে নয় দুর্বিপাক!
শরৎ আকাশে মেঘে মেঘে আঁকি শত ছবি সব
হামাগুড়ি দেয় শিশু মেঘ-ছবি হয়ে
কখনো গৌতম-যীশু কখনো ক্ষুধার্ত ব্যাঘ্র-অবয়ব;
স্নানঘরেও তো প্রায় প্রতিদিন জলে ছবি হয়
কখনো মধুসূদন-জীবনানন্দ কখনো বুদ্ধদেব বসু
ও-সব বিচিত্র ছবি দেখে মনে কত না সংশয়!
কাগজের ভাঁজে সুতোয় বিচিত্র রঙ মেখে টানি
আঙুলে রঙের মাখামাখি হয় রাজ্যের হয়রানি
ক্রীড়ারত দুই খরগোশের নৃত্য ছবি করে আনি;
সে ছবিতে আবার প্রস্তুত হয় কাব্যের প্রচ্ছদ
শংসায় শিল্পীর নাম প্রচারিত হয়
এভাবেই চিত্রকর হয়ে উঠি শিল্পের সম্পদ;
সমস্ত চিত্রকলার অবস্থান মননের গভীর ভিতর!
প্রকৃতিতে মেঘ-জল-রোদে স্বতঃস্ফূর্ত ছবি আঁকা হয়ে যায়
সত্তরের ভোটে বাঙালি নৌকার ছবি দেখেছে পদ্মপাতায়
বাঙালির জীবনে অনন্য ছবিটি সেদিন আঁকা হয়ে যায়
আমাদের মগজের কোষে যে ছবি মুজিব এঁকেছেন দীর্ঘ সাধনায়;
ছবি যায় চোখ থেকে চোখে বুক থেকে বুকে স্বপ্ন আঙিনায়
রেসকোর্স মাঠ থেকে বজ্রকণ্ঠ ভাষণের ছবি আঁকা হয় পতাকায়
স্বাধীনতা শব্দটি ছড়িয়ে যায় সমগ্র বাংলায়
লক্ষ শহিদের রক্তধারায় যে ছবি বিজয়ের গান গায়।
এভাবেই প্রতিটি চিত্রকলার সাথে থাকে স্বপ্নের বিশ্বাস
আর স্বপ্নভঙ্গ হলে পড়ে থাকে কিছু দীর্ঘশ্বাস।