কাওসার চৌধুরী,
দুপুরে একটু বেরিয়েছিলাম- মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের দিকে। কাজ সেরে বাসায় ফিরছিলাম লালমাটিয়ার পথে। হঠাৎ সামনে পড়লো একটি টং দোকান। ধুমিয়ে চা বিক্রী করছে। ভাবলাম সুরুৎ করে মেরে দেই এক কাপ। অনেকদিন এসব দোকানে চা খাওয়া হয় না। খুব মিস করছিলাম টং দোকানের চা। দোকানের সামনে বেঞ্চ।
বাঁশের দুটি খুটির ওপরে চিকন একটি বেঞ্চ পেতেছে খদ্দের বসানোর জন্য। তাতে দুজন তরুণ ছড়িয়ে-বসে চায়ের সাথে সিগারেট ফুঁকছে! প্রায় পুরো বেঞ্চ জুড়েই দুজনে সাম্রাজ্য বিস্তার করে আছে। বসতে পারি? জিজ্ঞেস করলাম ওঁদের। জিগানের কি আছে, বইয়া পরেন- ঝাঁকড়া চুলের তরুণটি জবাব দিলো।
দোকানদারকে চিনিছাড়া এক কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে বসে পড়ি বেঞ্চের অবশিষ্ট জায়গাটিতে। বসেই বুঝলাম- হয় আমি বেশ মুটিয়ে গেছি; নয় তো বেঞ্চের তক্তাটি ভীষণ চিকন! আমার ওজন সইতে না পেরে বেঞ্চটি ক্যাঁচকোচ শব্দ তুলে আর্তনাদ করলো দুই সেকেন্ড। সচকিত হয়ে ছেলেদুটি একটু সাবধান হয়ে বসলো বেঞ্চটিতে। ওঁরা ‘নেটফ্লিক্স‘ বনাম ‘চরকি‘ নিয়ে তর্ক করছিল! আমার আবার ওসবে আগ্রহ নেই খুব একটা।
এদিক ওদিক কিছুক্ষণ হাশফাঁস করে আকাশের দিকে মনযোগ দিলাম। বর্ষা কাল। আকাশে মেঘতো থাকার কথা। কিন্তু ঠিক সেই মুহুর্তে আকাশ ছিল মেঘমুক্ত, ঝরঝরে।
আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে দৃষ্টিটা একটু বাঁয়ে ঘুরাতেই নজরে এলো ১২ কি ১৪ তলা একটি সু-উচ্চ ভবন। হঠাৎ মনে পড়লো- ওই ভবনেই মোহনের বাসা। মোহন, আব্দুল্লাহ আল মোহন; আমি ডাকি ‘রমনীমোহন’ বলে! দেখতে শুনতে কন্দর্পের মত চেহারা; রঙটাও আপেলের মত টকটকে। মেয়েরা ওকে একবার দেখলেই দ্বিতীয়বার ফিরে তাকায় আড়চোখে! আর ওখানেই আমার ঈর্ষা!
অবশ্য ঈর্ষা করেই বা লাভ কি! বয়সে ও আমার চাইতে কমপক্ষে ২০/২২ বছরের ছোট। ওর বয়সে আমার এই ভিলেন-মার্কা চেহারাটার দিকেও কম …জনে তাকাতো না! এখন বয়স বেড়েছে। ওসবে মানায় না; স্মৃতিটুকুই সম্বল! নিজেকে সান্তনা দেই!
মোহন- ভাসানটেক সরকারী কলেজে শিক্ষকতা করে। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক। এক সময় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের ডান হাত ছিল। এখন অবশ্য ডান-বাম কোন হাতেই নেই মোহন; সীমানার বাইরে তার অবস্থান!
পরিচয়টা ওখানেই হয়েছিল আশির দশকের শেষভাগে; পরে বন্ধুত্ব হয়ে যায়! এখন আমার ওপরেই ভাব নিতে চায়, ওস্তাদি করে মাঝেমধ্যে। তবে ছেলে ভালো, আমি খুব মান্য করি ওঁকে। আমার খুব প্রিয় মানুষ মোহন।
[hfe_template id=’81’]
ও আমাকে একদিন কাছাকাছি কোথাও চা খাইয়েছিল এখানে। পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বার করে কল করি মোহনকে। অপর প্রান্ত বরাবরের মতই উচ্ছাস…… বস, কই আছেন, কেমন আছেন, লং টাইম- নো সি। আমি ওকে তখনকার পরিবেশের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়ে বলি- ভাইডি, চলে আসো এক্ষুণি। তোমার সেই টং-দোকানে বসে আছি। চায়ের অর্ডার দিয়ে দিয়েছি অলরেডি; তুমি এলে চা পান করবো একসাথে।
মোহন বললো- সেই মুহুর্তে লাঞ্চ করছে সে। বরং আমাকেই সে ধরে বসলো- তার বাসায় গিয়ে এক কাপ কফি পান করার জন্য। ভদ্রতাবশে আমি একটু না না করি। মোহন নাছোড় বান্দা। তার কথা- আমাকে যেতেই হবে, নইলে আড়ি। অগত্যা টং দোকানে চায়ের অর্ডার ক্যানসেল করে উঠে দাঁড়াই। কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। দোকানি বললো- চা রেডি। কী আর করা! দোকানিকে চায়ের টাকাটা দিয়ে বলি- ওটা কাওকে খাইয়ে দিতে।
মোহন বড়লোক মানুষ।
বারো কি চৌদ্দতলা ভবনের দশ তলায় থাকে। লিফট এসে থামে ওর ফ্ল্যাটের দরজার পাশে। ঘন্টা বাজাতেই মোহন নিজে এসে দরজা খুলে দিল। এরপরে তো হৈ হৈ রৈ রৈ অবস্থা। প্রায় চিৎকার করে তার বউএর উদ্দেশ্যে বার্তা প্রেরণ করলো- কাওসার ভাই আইসা পরছে- কফি বানাও রাশনা।
রাশনা- মোহনের বউ। শিক্ষকতা করেন হোম ইকনমিক্স কলেজে। মনোবিজ্ঞান পড়ান। টোনাটুনি দু’জনে বেশ ভালোই আছে ওরা। একটু পরেই রাশনা এলো গরম কফির কাপ নিয়ে। সাথে অল্প বিস্কুট আর লম্বা চুঙ্গার ভেতরে চিপস। মাঝারি একটা ট্রের ওপরে কফির আঞ্জামের পুরটাই রাখলো সামনের ছোট্ট সেন্টার টেবিলে।
কফির কাপ হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করি- চিনি দিয়েছো নাকি? রাশনা জিভ কেটে বলে- হালকা একটু চিনি দেবার পরেই মনে পড়লো আপনিতো চা-কফিতে চিনি খান না। দাঁড়ান, পাল্টে নিয়ে আসি। আমি বলি- থাক, সময়মত দাও নি যখন- এখন এই অবেলায় দিয়ে কী হবে। তাছাড়া তোমার সোয়ামীর রিসেন্ট পাবলিশড বইগুলো না পড়ে আমিতো আর মরতে পারি না। অন্যায় হবে।
ও হ্যাঁ, মোহনের লেখালেখি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই বলে শুরুতে উল্লেখ করি নি। তার ‘মঙ্গল-আসর’এর কথা কমবেশী সবাই জানেন- যারা একটুখানি খোঁজখবর রাখেন। আজ অব্দি মোহনের পাঁচ পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে। তারমাঝে সর্বশেষ প্রকাশিত তিনটি গ্রন্থ সে আমাকে গতকালই দিলো মাত্র।
একটি বড়ো সাইজের গ্রন্থ প্রকাশ করেছে মোহন- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে। গ্রন্থটির নাম- হাসু থেকে শেখ হাসিনা জননেত্রী থেকে বিশ্বনেত্রী। বেশ লম্বা নাম। মলাটের ওপরে একদম নিচের ডান দিকের কোনায় লাল সবুজ স্ট্রিপের ওপরেই দুই স্তরের লাইনদুটি পোক্ত করা। তার নিচে লেখকের নাম।
পুরো মলাটজুড়ে শেখ হাসিনার একটি মুখচ্ছবি- স্নিগ্ধ, সৌম্য। বইটি পড়া শুরু না করলেও উল্টেপাল্টে দেখেছি। ৫০৪ পৃষ্ঠার এই বইটি মূলত একটি মৌলিক রচনা। যদিও বিভিন্নজনের রচিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ থেকে অনেক কোটেশন আছে; সেগুলোর আকারে নেহায়েত ছোটও নয়- কিন্তু তারপরেও পুরো বইটিতে আব্দুল্লাহ আল মোহনের কর্তৃত্ব দৃশ্যমান। প্রতিটি বিষয়ে মোহন তার নিজের বিশ্লেষণ দিয়েই এগিয়ে গেছে বইটির শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত।
এই গ্রন্থে মোহন যাঁদের রচনা থেকে ‘কোট’ করেছেন- জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁদের অবস্থান অত্যন্ত উঁচুতে। তাঁদের প্রত্যেকের নাম লিখতে গেলে এই লেখাটির কলেবরই বৃদ্ধি পাবে কেবল- তৃপ্তি আসবে না! বইটি প্রকাশ করেছে ‘অন্যধারা’। প্রচ্ছদ করেছেন আরিফুল হাসান। প্রকাশকাল জুলাই ২০২১।
মোহন খুবই ভ্রমণপিপাসু মানুষ। তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বছর দুই আগে ভারত ভ্রমণ করে এসেছে। ভারত অনেক বড় আকারের দেশ। দু’দিন, দু’মাস এমন কি দু’বছরেও পুরো ভারতের দর্শনীয় স্থানগুলো আর তাদের সংস্কৃতির নির্যাস হৃদয় খুলে দেখে আসা সম্ভব নয়! মোহনের বেলাতেও সেই কথাটিই প্রযোজ্য- তার সংক্ষিপ্ত ভ্রমণে। এই সীমাবদ্ধ সময়ে মোহন ভারতের আগ্রা, দীল্লি, জয়পুর, আজমীর আর ওদিকে কাশ্মীর থেকে ঘুরে এসেছে। এসব ঐতিহাসিক স্থান-ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে মোহন লিখেছে- ‘দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টির ভারতভ্রমণ’। এটা তার আরো একটি অন্যতম গ্রন্থ। লেখার পাশাপাশি বেশকিছু ছবিও ব্যবহার করেছে সে এই গ্রন্থে।
একটি ব্যাপার একটু এখানে বলে রাখা ভালো। কিছু ভ্রমণ কাহিনী আছে- যেখানে লেখকের চর্মচোখে ধরা পড়া বিষয়গুলোই প্রাধান্য পায়। মোহনের বইটাতে আমি দেখেছি- স্থান কিংবা বস্তুর অভ্যন্তরের দর্শন এবং ইতিহাস বিশ্লেষনে মনযোগী হয়েছে সে প্রতিটি নিবন্ধে। অবশ্য সেটা তার বইটির শিরোনাম বিবেচনা করলেও প্রতিভাত (দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টির ভারতভ্রমণ) হবে। বইটি প্রকাশ করেছে ‘প্রকাশনা ডটকম’; প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
[hfe_template id=’81’]
আজকের আলোচনায় শেষ বইটির শিরোনাম- ‘খুঁজে ফেরা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের হৃদয় হতে’। বইয়ের শিরোনামের ক্ষেত্রে মোহন এত লম্বা নাম কেন পছন্দ করে জানি না। অবশ্য সে অভ্যেসটা আমারও আছে কিঞ্চিৎ! আমার একটি প্রামাণ্যচিত্রের শিরোনাম- ‘সেই রাতের কথা বলতে এসেছি’।যাক ‘কাটাকুটি’ হয়ে গেলো।
এই বইটি আকারে খুব বড়ো নয়। আকারে বড়ো হলেই যে সবকিছু অনেক বিশাল হবে, শক্তিশালী হবে- তেমনটি তো নিশ্চয়ই নয়! হাতী তো প্রাণী জগতে অন্যতম বিশালদেহী প্রাণী। তাই বলে হাতীই কি জগতের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী? হাতী বশে আনতে মনুষ্যজাতির একটি ‘খ্যাদা’ই যথেষ্ট!
মোহনের তিন নম্বর বইটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তি-জীবন, পারিবারীক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় কিংবা আন্তর্জাতিক ব্যাপ্তি নিয়ে আজ অব্দি যা লেখা হয়েছে- এই বইটি তার চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু নয়। কিন্তু যেখানটায় এটা এক এবং অদ্বিতীয় হয়ে উঠেছে- সেটা হল এটার প্রিসিশনে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি বিষয়কে মোহন খুব সংক্ষিপ্তাকারে, ছোট, অথচ শাণিত বিশ্লেষণের মাধ্যমে তুলে ধরেছে তার বইটিতে। নতুন প্রজন্মের জন্য এই বইটির ‘পাঠ’ অত্যন্ত আবশ্যক বলে মনে হল আমার কাছে।
খুব অল্প পরিশ্রমে বঙ্গবন্ধুকে ব্যাপক আকারে খুঁজে পাওয়া সম্ভব এই বইটিতে। বঙ্গবন্ধুকে বুঝবার জন্য এই বইটি হতে পারে ‘প্রথম পাঠ’। চমৎকার একটি প্রচ্ছদ দিয়ে এই বইটি প্রকাশ করেছে ‘প্রকাশনা ডটকম’। এটার প্রকাশকাল মে, ২০২১।
হাহ……! এক কাপ কফি আর ছোট দু’টি বিস্কুট দিয়ে তিন তিনটি বই সম্পর্কে লিখে ফেললাম প্রায় ১২০০ শব্দ। খুব সস্তা হয়ে গেলো না!? না বন্ধুগণ, এত সস্তায় বিক্রী হওয়া কি আমার পক্ষে কি সম্ভব। আদৌ যদি নিজেকে ‘বিক্রী’ করতেই চাইতাম- স্বাধীনতার ৫০ বছরে বহুদামে বহুবার নিজেকে বিক্রী করতে পারতাম! কিন্তু সেটাতো করি নি কোনদিন। এই পড়ন্ত বেলায় এসে ‘ওসবের’ আর প্রয়োজনটাইবা কোথায়! নৈতিকতার বাইরে কোনদিন পা রাখি নি, শেষ নিঃস্বাস পর্যন্তও নয়!
মোহনের লেখালেখি নিয়ে এত কথা বলা শুধু একটি কারনেই; তা হল- ছেলেটি লেখে ভালো। তার লেখাগুলো আমার অন্তত ভালো লাগে। আমি ওর ‘আদর্শিক অবস্থানের’ একজন অনুরাগী।
এই পাগলটি (!?) প্রথমদিকে সোনালী ব্যাংকে কাজ করতো বেশ ভালো পোস্টে। সেটা ছেড়ে পুনরায় বিসিএস দিয়ে সফলতার সাথে সে এসেছে ‘এডুকেশন ক্যাডারে’। শিক্ষাকে জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছে। নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে সে শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের বই বিলায়। ‘মঙ্গল আসর’ নামে তার যে উদ্যোগটি আছে- তাতে সে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাংলাদেশ, তার ইতিহাস ঐতিহ্য, ব্যক্তি-জীবনে নৈতিকতা, সততা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলিয়ে বেড়ায় অকাতরে। হ্যাঁ, সেসব কারনে হলেও মোহনকে ভালোবাসা যায় বটে। মোহনের কল্যাণ হোক। জয় হোক তার ‘মঙ্গল আসর’এর।

কাওসার চৌধুরী
অভিনেতা, নির্মাতা এবং মুক্তিযোদ্ধা
বহুল আলোচিত‘সেই রাতের কথা বলতে এসেছি‘, ‘গণআদালত‘, ‘বধ্যভূমিতে একদিন‘-প্রভৃতি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের নির্মাতা তিনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ। মঞ্চ ও টেলিভিশনের স্বতন্ত্র শিল্পধারার নিরলস যোদ্ধা তিনি। প্রায় দুই শতাধিক টিভি নাটকে অভিনয় করলেও মঞ্চকেই আপন মনে করেন এবং বেশি উপভোগ করেন। ভালোবাসেন শিক্ষকতা। আজন্মের গণমাধ্যম কর্মী কিংবা ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক হিসেবেও তিনি সুপরিচিত।
কাওসার চৌধুরী ১৯৫৮ সালের ১২ জুন জন্মগ্রহণ করেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি; ১৯২১ সাল অর্থাৎ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অব্দি তিনিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র সৌভাগ্যবান ছাত্র, যিনি ‘ডাকসু সাংস্কৃতিক এবং সাহিত্য’- উভয় প্রতিযোগিতায় পরপর দু’বার ব্যক্তিগত-চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেছেন।